ই কমার্সের সুবিধা কি? সব বিস্তারিত জেনে নিন।
আপনারা ই-কমার্সের সুবিধা কি? এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। ই কমার্স বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় একটি বিজনেস মাধ্যম।
আপনি এখানে ই কমার্সের ব্যবহার সম্পর্কে কিছু জানতে পারবেন। ই-কমার্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুরো পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইলো।
ভূমিকাঃ
ই-কমার্স আমাদের বিজনেস কে অনেক সহজ করে দিয়েছে। আমরা খুব সহজে আমাদের বিজনেস দের দেশ-বিদেশের যেখানে প্রান্তে নিয়ে যেতে পারি। ই কমার্সের মাধ্যমে আমরা বিজনেস করে খুবই উপকৃত হয়ে থাকি।
এটির মাধ্যমে আমরা সহজে যে কোন প্রোডাক্ট বিক্রয় করতে সক্ষম হয়ে থাকি। ই-কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসা করার ফলে খরচ অনেক কম লাগে এবং সে তুলনায় লাভ বেশি থাকে। বর্তমানে ই কমার্সের ব্যবহার কারীর সংখ্যা প্রচুর।
ই কমার্স কি?
ই-কমার্স এর পুরো নাম হল ইলেকট্রনিক কমার্স। এটি একটি ডিজিটাল ব্যবসা পদ্ধতি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই ব্যবসা করা হয়। এক কথায় বলতে গেলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন পণ্য অনলাইনে কেনাবেচা করার পদ্ধতিকে কিংবা তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যম কে ই-কমার্স বলা হয়। ই কমার্সের ব্যবহার অনেক রয়েছে। বর্তমানে প্রায় অনেকেই ই-কমার্সের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে।
বাংলাদেশের বড় ই কমার্স সাইটঃ
ই কমার্সের ব্যবহার বর্তমানে যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই তুলনায় দেশ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা জানবো বাংলাদেশের বড় ই কমার্স সাইট এর নাম গুলো-
- OTHOBA.COM
- BIKROY.COM
- DARAZ.COM.BD
- PICKABOO.COM
- AJKERDEAL.COM
- CHALDAL.COM
- BDSHOP.COM
- ROKOMARI.COM
- ITBAZAR.NET
- TECKBANGLAIT.COM ইত্যাদি।
ই কমার্সের সুবিধাঃ
ই কমার্সের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ই-কমার্স ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে যায়। এখন আমরা ই-কমার্সের সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো-
- খরচ হ্রাসঃ ই-কমার্স এমন একটি ব্যবসায়িক মাধ্যম যেটি অন্যান্য তুলনায় খরচ অনেক কম হয়ে থাকে। এই ব্যবসা করতে হলে ব্যবসায়িক দেরকে ওয়েবসাইট, ই-মেইল, ফেসবুক পেজ ইত্যাদি ব্যবহার করতে হয়। ই-কমার্সের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের যেকোনো প্রান্তের মানুষ সহজেই কেনাবেচা করতে পারে।
- গতিশীলতাঃ ই-কমার্স কম সময়ে খুব দ্রুত আর্থিক লেনদেন করতে পারে। এই পদ্ধতিতে একজন ভোক্তা পৃথিবীর যে দূরত্বেই থাকুক না কেন তারা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে যেকোনো লেনদেন সম্পন্ন করতে পারে। এর ফলে তারা খুবই উপকারিত হয়ে থাকে।
- লেনদেন ব্যয় সংকোচনঃ এই ব্যবসায়ী কর্মচারীদের তেমন প্রয়োজন হয় না। কারণ ই-কমার্সের সকল লেনদেনের হিসাব নিকাশ কাগজ-কলমে না হয়ে তা ডকুমেন্টে তৈরি করা হয়। যার ফলে কর্মচারীর সংখ্যা কম থাকে এবং টাকা অনেক বেচে যায়।
- বিপণন সুবিধাঃ ই-কমার্স এর মাধ্যমে যখন আমরা কোন ওয়েবসাইটে আমাদের প্রোডাক্ট নিয়ে পোস্ট করি তখন এটি অন্যান্য টিভি মিডিয়া কিংবা ব্যানারের তুলনায় দেশ-বিদেশে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পরে। যার ফলে খুব দ্রুত প্রোডাক্ট সম্পর্কে মানুষজন জানতে পারে এবং সহজেই লেনদেন করতে পারে।
- কর্ম সময় কমঃ ই-কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসা করার ফলে কোন নির্দিষ্ট কেনাবেচার সময় থাকে না। এখানে ক্রেতা যেকোনো সময় প্রোডাক্ট কিনতে পারে। এর মাধ্যমে ক্রেতা সরাসরি উপস্থিত না থেকে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে কিনে থাকে।
- কাস্টমার সার্ভিসঃ ই-কমার্স এর মাধ্যমে যে প্রতিষ্ঠান কাস্টমারদের সবথেকে বেশি সুবিধা প্রদান করে থাকবে সেই প্রতিষ্ঠান দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। এদের বেচাকেনা অনেক বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে ই-কমার্স এ ক্রেতারা অনেক সুবিধা পেয়ে থাকছে। তাছাড়াও ক্রেতাদের সাথে সাথে বিক্রেতারাও অনেক সুবিধা পেয়ে থাকে।
- নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাঃ ই-কমার্স এর মাধ্যমে ব্যবসা করার ফলে অনেক নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এর ফলে কর্মসংস্থানে কম সংখ্যক হলেও অনেক কর্মী কাজ করে এবং বেতন পেয়ে তাদের সংসার চালাতে পারে। ইত্যাদি।
ই কমার্সের ব্যবহারঃ
দিনের পর দিন ই-কমার্সের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দেশ-বিদেশের ছোট থেকে বড় যে কোন ব্যবসায়ীরা ই-কমার্সের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা করে থাকে। এ কমেন্ট বলতে সাধারণত অনলাইন এর মাধ্যমে কোন পণ্য কেনা বেচাকে বুঝি। অনলাইনের মাধ্যমে শপিং করা কিংবা কোন পণ্য অনলাইনে কেনাবেচা করাই হলো ই-কমার্সের একটি বড় উদাহরণ। ই-কমার্স এর মূলত চারটি ভাগে ভাগ করা হয় যথা-
- বিজনেস টু কাস্টোমার অর্থাৎ ব্যবসা থেকে ভোক্তা(B2C)
- বিজনেস টু বিজনেস অর্থাৎ ব্যবসায় থেকে ব্যবসায়(B2C)
- কাস্টমার টু বিজনেস অর্থাৎ ভোক্তা থেকে ব্যবসায়(C2B)
- কাস্টমার টু কাস্টমার অর্থাৎ ভোক্তা থেকে ভোক্তা(C2C)
ই কমার্স এর অসুবিধাঃ
আমরা এতক্ষণ ই-কমার্স কি? কমার্সের সুবিধা এবং ই কমার্সের ব্যবহার সম্পর্কে জানলাম কিন্তু ই-কমার্সের আবার অসুবিধাও রয়েছে। ই-কমার্সের মাধ্যমে যে আমরা সবসময় উপকৃত হব তা কিন্তু নয়। ই-কমার্স এর কয়েকটি অসুবিধা নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো-
- অধিক মাত্রায় অর্ডারঃ ই-কমার্সের মাধ্যমে যদি ব্যবসা করা হয় তাহলে এক সময় যে অনেক অর্ডার পাওয়া যায়। এই সময় যদি সেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ঠিকমতো অর্ডার সরবরাহ করতে না পারে তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের নাম খারাপ হয়ে যাবে।
- দূরের স্থানে সরবরাহঃ ই-কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসা করতে হলে যে সকল প্রোডাক্ট এর দাম বেশি থাকবে তা কিন্তু নয়। সকলের চাহিদা অনুযায়ী কম থেকে শুরু করে বেশি দাম পর্যন্ত যেকোনো প্রোডাক্ট থাকতে পারে। কিন্তু অনেক সময় ডেলিভারি করার স্থান অনেক দূরে হয়ে যায় কিন্তু সেই তুলনায় যে ব্যক্তি অর্ডার দিয়েছে সেই অর্ডারকৃত পণ্যটির দাম অনেক কম থাকে। তাই এই সময় প্রোডাক্টের দাম কম থাকায় দূরবর্তী স্থানে ডেলিভারি করতে হলে টাকা লোকসানের শিকার হয়।
- কর্মীর অভাবঃ ই-কমার্সের মাধ্যমে বিজনেস করার ফলে এখানে বেশি কর্মীর প্রয়োজন হয় না। কিন্তু তারপরও পণ্যের তুলনায় সরবরাহ করার খরচ অনেক বেশি হয় বিধায় লোকসানের শিকার হয়ে থাকে।
- লেনদেন নিরাপত্তার অভাবঃ অনেক সময় দেখা যায় এই কমার্সের মাধ্যমে বিজনেস করার মাধ্যমে লেনদেনের নিরাপদ তার অভাব থাকে। কারণ অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্নভাবে হ্যাকার অনলাইনের মাধ্যমেই লেনদেনকৃত টাকা আত্মসাৎ করে থাকে।
- সরাসরি উপস্থিতঃ ই-কমার্সের মাধ্যমে কোন মানুষ কোন প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে সেই ব্যক্তি স্বশরীরে সেই প্রোডাক্ট দেখতে পারে না। এর কারণে অনেক সময় প্রোডাক্ট কেনার পর যখন ডেলিভারি করতে লোক আসে তখন সে প্রোডাক্টটি রিসিভ করে দেখতে হয় প্রোডাক্টটি আসলেই ভালো নাকি খারাপ।
ই কমার্স এর প্রতিষ্ঠাতা কেঃ
ই-কমার্স বর্তমানে ডিজিটাল জামানায় খুব জনপ্রিয় একটি অনলাইন বিজনেস মাধ্যমে। ই কমার্সের ব্যবহার মানুষকে একটি নতুন অভিজ্ঞতা এনে দিয়েছে। এখন ছোট থেকে বড় যে কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে তাদের বিজনেস বড় করতে চাই। ই-কমার্স এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন মাইকেল অ্যালড্রিচ। একে মূলত এই কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা বা উদ্ভাবক হিসেবে চেনা হয়। ই কমার্স প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে বর্তমানে মানুষের খুবই উপকার হয়েছে ।
লেখকের শেষ কথাঃ
ই কমার্সের মাধ্যমে আমরা উপকৃত হয়ে থাকলেও ই-কমার্সের কারণে আমাদের অনেক সমস্যা হতে পারে। তাই ই কমার্স ব্যবহার করার সময় সাবধানতা বজায় রাখতে হবে। এমন ভাবে ই কমার্স ব্যবহার করতে হবে যে এর ফলে যেন আমাদের বিজনেসের ক্ষতি না হয়। ই কমার্সের ব্যবহার সম্পর্কে আমাদেরকে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখতে হবে।
পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে পাশে থাকবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url