ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

আপনারা কি ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। ডায়রিয়া ছোট থেকে বয়স্ক সকল প্রকার মানুষের হতে পারে।


 
তবে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি লক্ষ্য করা যায়। ডায়রিয়া বিষয়ক সম্পূরক তথ্য জানতে আমাদের পোষ্টটি পড়তে থাকুন।

ভূমিকাঃ

ডায়রিয়া হলো এমন একটি রোগ যেখানে একজন ব্যক্তির পাতলা বা জলযুক্ত মল এবংঘন ঘন হয়ে থাকে। এটি সাধারণত বর্ষাকালে হয় বেশি হয়ে থাকে,তবে অন্যান্য ঋতুতেও কম বেশি হয়ে থাকে। ডায়রিয়া হওয়ার লক্ষণ গুলো জানলে আমরা সহজে ডায়রিয়া হয়েছে কিনা সেই সম্পর্কে জানতে পারবো।

ডায়রিয়া হলে মানুষ খুবই অচল হয়ে পরে। ঘন ঘন পায়খানায় যেতে বিধায় বাহিরে বেশি থাকতে পারা যায় না। অতিরিক্ত ডায়রিয়া হলে শিশু কিংবা বড় মানুষও মারা যেতে পারে। ডায়রিয়া খুবই মারাত্মক একটি রোগ যা রোগীর জীবন শেষ করার পথে নিয়ে যায়।

ডায়রিয়া কেন হয়ঃ

  • ডাইরিয়া বিভিন্ন কারনে হতে পারে। আমাদের শরীর যখন জীবাণু সংক্রান্ত হয়ে থাকে তখন ডায়রিয়া হয়।
  • আবার আমরা যখন তোর সাথে পানি পান করে থাকি তখন আমাদের ডায়রিয়া হয়ে থাকে।
  • আবার বিভিন্ন ধরনের পচাভাসে খাবার খাওয়ার মাধ্যমেও ডায়রিয়া হয়ে থাকে।
  • আবার ময়লা পরিবেশে বসবাস করতে থাকলেও ময়লা আবর্জনা দ্বারা ডায়রিয়া হতে পারে।
  • আবার আমরা যদি ময়লা আবর্জনা পরিবেশে খাবার খেয়ে থাকি সেগুলো অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ইত্যাদি।
যখন মানুষের ডায়রিয়া হয়ে থাকে, তখন ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ দেখা যায়। ফলে আমরা যদি সেই লক্ষণগুলো দেখে ডায়রিয়ার রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকারের এর সকল নিয়ম কানুন মেনে চলি, তাহলে আমরা ডায়রিয়া হতে মুক্তি পেতে পারবো।

ডায়রিয়া রোগের লক্ষণঃ

  • ডায়রিয়া রোগের অনেক লক্ষণ থাকে। ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ গুলো নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো-
  • যখন কোন মানুষের ডায়রিয়া হয় তখন তাদের পেট ফাঁপা শুরু করে।
  • ডাইরিয়া হলে পেটের পিছনে বাবার পেট ব্যথা শুরু হয়।
  • ডায়রিয়া লক্ষণ গুলোর মধ্যে বমি বমি হওয়াও একটি লক্ষণ।
  • ডায়রিয়া হলে ঘন ঘন বমিও হতে পারে।
  • যখন কোন মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় তখন তাদের প্রচন্ড জ্বর থাকে।
  • প্রসাপ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। যখন কোন মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় তখন তাদের মন পানির মতন হয়ে যায় কিংবা ফেনা ফেনা সৃষ্টি হয়।
  • যখন কোন মানুষের ডায়রিয়া হয় তখন তাদের মল দিয়ে খুবই দুর্গন্ধ বের হয়।
  • আবার কখনো কখনো মলমূত্রের সাথে রক্তও বের হতে পারে।
  • ডায়রা হলে মানুষের শরীরে পানি শূন্যতার অভাব দেখা দেয়।
  • ডায়রিয়া হলে হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি হতে থাকে।
  • এই সময় খুবই পিপাসা লাগে মানুষ পিপাসার জন্য পাগলের মতন হয়ে যায়।
  • ডায়রিয়ার সময় আমাদের মুখমন্ডল শুকনা হয়ে যায় অর্থাৎ শুষ্ক দেখা যায়।
  • ডায়রিয়ার লক্ষণ গুলোর মধ্যে শরীর ক্লান্ত অনুভব করাও একটি লক্ষণ।
  • এই সময় যখন কোন মানুষ কান্না করে তখন চোখ দিয়ে পানি পরতে দেখা যায় না।

ডায়রিয়া রোগের প্রতিরোধঃ

আমরা এতক্ষণ ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ গুলো জানতে পারলাম। এবার আমরা জানবো ডায়রিয়া রোগের প্রতিরোধ করার উপায়। নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
  • ডায়রিয়া রোগ প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে খাবার তৈরি করার আগে ভালোভাবে আমাদের হাত ধুয়ে নিতে হবে।
  • আমরা যখন টয়লেটে প্রপোজ করব তখন টয়লেট করার পর আমাদের হাত-পা ভালোভাবে ধৌত করে বের হতে হবে।
  • ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে হলে যখন আমরা হাঁচি কিংবা কাশি অথবা হাঁচি দিবো তখন আমাদের হাত ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধৌত করে নিতে হবে।
  • আমাদেরকে যে কোন খাবার খাওয়ার আগে সচেতন থাকতে হবে। কোন খাবার পচা কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত খাবার হলে তা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি বাসি খাবার থাকে তাহলে তা অবশ্যই ভালোভাবে গরম করে নিয়ে তারপর খেতে হবে।
  • আমরা যখন পানি খাব তা অবশ্যই নিরাপদ এবং বিশুদ্ধ পানি হতে হবে। বাসায় আমরা যখন খাবার রান্না করি তা অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি দিয়ে রান্না করতে হবে।
  • যদি আমাদের খাবার পানি কোন কুয়ায় কিংবা নদী পুকুর থেকে নিতে হয় তাহলে অবশ্যই তার খাবার আগে পানি ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করে নিতে হবে।
  • ছোট বাচ্চারা যদি যেখানে সেখানে মলমত্র ত্যাগ করে তাহলে সাথে সাথে তা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের জন্মের পর থেকে অন্তত ছয় মাস মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কোন কিছু খাওয়ানো যাবে না।

ডায়রিয়া রোগের প্রতিকারঃ

  • যখন কারোর ডায়রিয়া হয় তখন শরীরে প্রচুর পানির শূন্যতা দেখা দেয়। এ সময় মানুষকে ঘন ঘন তরল খাবার এবং স্যালাইন খেতে হবে।
  • ডায়রিয়া হলে মানুষ খুবই দুর্বল হয়ে যায় তাই শরীরের দুর্বলতা দূর করতে হলে সেই সময় বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
  • ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হলে শিশুদের খুবই কষ্ট হয়ে যায়। শিশুদের দায়রা হলে সে সময় মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার পাশাপাশি স্যালাইন খাওয়াতে হবে। এই সময় শিশুদের যদি ডায়রিয়া ঠিক হতে চব্বিশ ঘন্টার বেশি সময় পেরিয়ে যায় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
  • এই সময় ডায়রিয়া রোগীকে বেশি বেশি করে ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। ডাব খুবই পুষ্টি কর একটি ফল। ডাব খাওয়ার মাধ্যমে ডায়রিয়া রোগের জীবাণু দূর হয় পাশাপাশি পানি শূন্যতা দূর করে থাকে।
  • ডায়রিয়া রোগের ডায়রিয়া প্রতিকার করতে হলে চিড়া ধোয়া পানি খাওয়ানো যেতে পারে।ইত্যাদি তবে ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ গুলো শনাক্ত হলে দ্রুত ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়াই উত্তম হবে।

ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত?

ওষুধ বলতে আমরা বুঝে থাকি যেটি খেলে আমাদের অসুখ সেরে উঠতে পারে। ওষুধ না খেলে মানুষ সুস্থ হতে পারে না। তারা অসুস্থই থেকে যায় এবং আসতে আসতে ওষুধ সেবন না করায় অনেক রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। ওষুধ আমাদেরকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। তবে ডাইরিয়ার ক্ষেত্রে ওষুধ এর তেমন প্রয়োজন হয় না। 

এক কথায় ডায়রিয়ার সময় আমাদের শরীর থেকে যেসব তরল ও লবণ বেরিয়ে যায় সেগুলোর ঘাটতি পুড়ন করতে পারলেই ডাইরিয়া সেরে উঠে। এটির মাধ্যম হলো স্যালাইন,ডাব। এক কথায় ডাইরিয়া হলে বেশি বেশি করে তরল খাবার খেতে হবে। তবে তারপরও একটি ডাইরিয়ার ভালো একটি ওষুধ হলো জিংক। এটি এমন একটি ওষুধ যা খেলে ডায়রিয়ার পাতলা পায়খানা করার সময়টা কমাই নিয়ে আসে।

ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবেঃ

ডায়রিয়া যখন হয় তখন অনেক তরল ও লবণ আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। মানুষ অনেক দুর্বল হয়ে পরেএবং এই সময় তার শরীরের ভেতরে থাকা সকল পুষ্টি বেরিয়ে যায়। ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ অনেক রয়েছে যেগুলোকে আমাদের শনাক্ত করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী রোগীদেরকে সেবা দিতে হবে। যেসব ফল খাওয়া উচিত তা হলো-
  • নারিকেল দুধ,
  • আম,
  • পেঁপে,
  • মসুর ডাল,
  • কলা,
  • আনারস,
  • আমরা,
  • করমচা,ইত্যাদি।
উপরের আলোচিত প্রত্যেকটি ফলে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়ামযুক্ত। তাই এসব ফল খেলে ডায়রিয়া প্রতিকার করা যায়।

লেখকের শেষ কথাঃ

ডায়রিয়া রোগ থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই আমাদের কে সচেতন থাকতে হবে,যাতে আমরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত না হই। আমাদের কে সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন থাকতে হবে।যা খাবো তা পরিষ্কার হতে হবে সবসময় বিশুদ্ধ পানি পান করতে। যদি কখন ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ গুলো চোখে  পরে তাহলে দ্রুত ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চাদের খুবই যত্নে রাখতে হবে এবং বাচ্চাদের প্রথম ৬ মাস মায়ের বুকের দুধ পালন করতে হবে।

পোষ্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে পাশে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url