ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আপনারা কি ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? আরে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আপনারা এখানে ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায় এর পাশাপাশি মেদ কমানোর অনেক নিয়ম কানুন কিংবা করনীয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
শরীর যদি অতিরিক্ত মোটা হয় তাহলে কাজকর্ম করতে অনেক অসুবিধায় করতে হয়। ওজন কমানোর সকল নিয়ম কানুন জানার জন্য পুরো পোস্টটি পড়ার অনুরোধ করা হলো।
ভূমিকাঃ
মোটাপান মানুষের জন্য খুবই বিরক্তকর। বেশি মোটা মানুষ অনেক অলস প্রকৃতির হয়ে থাকে। এরা যে কোন কাজ করতে অনেক সময় নিয়ে থাকে। মোটা মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়ে থাকে।বর্তমানে চিকন হওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। মানুষ এখন চিকন হওয়ার জন্য এগুলো নিয়ম কানুন মেনে চলে।
ছেলে মেয়ে উভয় মোটা শরীর হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য শরীরের ওজন কমাতে থাকে।ছেলেরা চিকন হওয়ার জন্য ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে সেই অনুযায়ী চেষ্টা করে। আবার মেয়েরা মেয়েদেরটা জেনে সেই অনুযায়ী চেষ্টা করে থাকে।
ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায়ঃ
ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো-
- বিএমআর (BMR) জেনে নিনঃ আপনার শরিরের ক্যালরির চাহিদা জেনে তারপর সেই চাহিদা অনুযায়ি খাবার খেতে হবে।
- সঠিক সময়ে ব্রেকফাস্টঃ নিয়মিত খাবার খেতে হবে। সকালের খাবার বাদ দেওয়া একদম চলবে না।
- ডায়েট প্ল্যানঃ একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে নিজের শরীরের কন্ডিশন অনুযায়ী যেকোনো একটি ডায়েট প্ল্যান মত চলতে হবে।
- নিয়মিত ব্যায়ামঃ ব্যায়াম ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। এর ফলে ছেলেরা দ্রুত ওজন কমাতে পারে।
- খাদ্যতালিকায় প্রোটিনঃ খাবারের তালিকায় প্রোটিন বেশি রাখটে হবে।
- ফাস্টফুড খাবার পরিহারঃ এগুলো খাওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত মেদ বৃদ্ধি হতে থাকে।
- পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবেঃ পানি শরীরের টক্সিন বের করতে ভুমিকা রাখে পাশাপাশি শরীর এর ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- রাতের খাবার ঘুমানোর অনেক আগে শেষ করাঃ এর ফলে খাবার হজম হয়ে থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ইত্যাদি।
- কালোজিরাঃ কালজিরা নিয়মিত খাওয়ার ফলে এটি শরীর এর মেদ কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- গ্রিন টিঃ গ্রিন টি শরীর এর ওজন কমাতে খুবই উপকারী প্রমানিত হয়েছে। গ্রিন শরীর এর জন্য খুবই ভালো। এটি খাওয়ার কারনে শরীর এ ওজন কমে যায়।
- শর্করা খাবারঃ চিকন হতে অবশ্যই শর্করা জাতীয় খাবার খেতে হবে বেশি বেশি।
- চিয়া বিজঃ চিয়া বীজ ওজন দ্রুত কমিয়ে ফেলতে পারে জন্য চিয়া বীজ এর নাম প্রায় সকল এ মুখেই শোনা যায়।
চিকন হওয়ার খাদ্য তালিকাঃ
আমরা এখন চিকন হওয়ার খাদ্য তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। চিকন হতে গেলে আমাদেরকে অবশ্যই খাবারের প্রতি সচেতন হতে হবে। কোন খাবার খেলে শরীরের ওজন কমবে আবার কোন খাবার খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে কিংবা কোন খাবারে কোন ভিটামিন রয়েছে? এসব সকল কিছু বিষয় জ্ঞান রাখতে হবে।চিকন হওয়ার জন্য সঠিক খাদ্যা খাওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি। আমরা এখন কিছু স্বাস্থ্যকর খাদ্যের তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো-
- প্রোটিনযুক্ত খাবারঃ মাছ,মুরগী, ডিম, চর্বিহীন গরুর মাংস, কম ফ্যাটযুক্ত পনির,টকদই, বাদাম, বীজ।
- কম কার্বোহাইড্রেটের খাবারঃ ভাত, আলু, মাছ, ডিম, মুরগির মাংস খেতে হবে।
- সবজি ও ফলঃ তাজা সবজি এবং ফল নিয়মিত খেতে হবে যাতে শরীর এ পুষ্টি আসে। যেমন কলা খুবই উপকারী।
- পানিঃ পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, যাতে শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে থাকে এবং টক্সিন বেড়িয়ে যেতে সাহায্য করে।
- লেবুঃ লেবু ওজন কমাতে ভালো ভুমিকা পালন করে। নিয়মিত লেবু খাওয়ার ফলে পেটে থাকা চর্বি দিন দিন কমতে থাকে।
- শসাঃ শসা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে ওজন কমা শুরু করে। বর্তমানে অনেকেই ওজন কমাতে শসা খেয়ে থাকে।
মধু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়ঃ
ওজন কমানোর অনেক উপায় রয়েছে। ওজন কমাতে হলে আমাদেরকে ব্যায়াম করতে হয় আবার অনেক সময় অনেক কিছু খেতে হয়। শরীরের ওজন কমানোর জন্য যা যা করা লাগে সেসবের মধ্যে অনেক কিছু আছে সহজ আবার অনেক কিছু রয়েছে কঠিন। সাধারণত মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি ব্যায়াম করে থাকে। ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে বলতে গেলে শেষ করা যাবে না।
- মধু দিয়ে যে ওজন কমানো যায় এটি সম্পর্কে হয়তো খুব কম মানুষই জানে। আমরা যদি প্রতিদিন সকালে গরম পানির সাথে লেবু এবং মধু মিশিয়ে খেয়ে থাকি তাহলে এটি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের ওজন কমতে থাকবে। কারণ গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশ্রণ করে খেলে তার শরীরের চর্বি কাটাতে ভালো ভূমিকা পালন করে থাকে।
- আবার আমরা যদি দারুচিনির সাথে মধু মিশিয়ে তা নিয়মিত খেতে থাকি তাহলে এটি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের ওজন কমতে থাকবে। আমরা আসলেই অনেক উপকার করতে হয়ে থাকবো। যারা ওজন কমাতে চায় তাদেরকে অবশ্যই এটি খাওয়া উচিত।
- আবার আমরা যদি গোলাপের পাপড়ির চা বানিয়ে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে খাই তাহলে আমাদের শরীরের ওজন কমানোর জন্য এটি খুবই ভালো একটি উপায় হবে। এতে থাকা গুনাগুন আমাদেরকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
- আমরা যদি আমাদের ওজন কমাতে চাই তাহলে আমাদেরকে লেবুর সাথে মধু মিশিয়ে তার শরবত বানিয়ে খেয়ে নিতে হবে। এটি প্রায় দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
- আবার আমরা যদি ত্রিফলা পানিতে ভিজিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে খাই তাহলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এটি ভালো কাজ করে থাকবে।
মেদ কমানোর ব্যায়ামঃ
শুধু ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানলে হবে? মেদ কমানোর উপায় তো ছেলে ও মেয়েদের উভয়কেই জানতে হবে। এখন আমরা জানবো মেদ কমানোর ব্যায়াম যার মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ে দুই জনই উপকৃত হবে।
- স্কোয়াটঃ স্কোয়াট এমন একটি ব্যায়াম যেখানে প্রথমে ব্যক্তিকে শরীর টান টান হয়ে দাঁড়াতে হবে। এরপর তাদের কাঁধের সমান করে দুই পায়ের মাঝখানে যে ফাঁকা জায়গাটা রয়েছে তা সমান করতে হবে। এরপর আমাদের হাঁটু ভাঁজ করে নিতে হবে এবং আমাদের শরীরের যেটিকে উরু বলি তাতে অর্ধেক বসতে হবে এবং উঠতে হবে।
- হাই নিজঃ এই ব্যায়ামটি শরীরের মেদ কমানোর জন্য খুবই উপকারী। এই ব্যায়ামটিতে আমাদেরকে প্রথমে এক পা বুকের কাছে তুলে ধরে রাখতে হবে এবং তারপর তা নামিয়ে ওপর পার্টি পর্যন্ত তুলে ধরে রাখতে হবে। এভাবে আস্তে আস্তে দুই পা একের পর এক চেষ্টা করলে পরবর্তীতে দ্রুত গতিতে করা যাবে। এর ফলে শরীরের মেদ কমতে থাকবে।
- পুশ আপঃ পুশ আপ সম্পর্কে আমরা প্রায় সবাই জানি। এটি এমন একটি ব্যায়াম যা প্রায় সবাই ব্যায়াম করার সময় করে থাকে। যেহেতু প্রায় মানুষের পুশআপ সম্পর্কে জানা তাই আর এই সম্পর্কে কিছু বললাম না। যারা শরীরের মেদ কমাতে চান তাদের অবশ্যই পুশআপ করা উচিত।
- সিটআপঃ সিটআপ ব্যায়ামটি মূলত চিত হয়ে মেঝেতে শুয়ে থেকে তারপর দুই পা হাঁটু পর্যন্ত ভাজ করতে হবে। এরপর দুই হাত হাতে পর্যন্ত রেখে উঠতে হবে এবং শুতে হবে। এতে বারবার করার মাধ্যমে পেটে চাপ পড়বে এবং পেটের মেদ কমতে থাকবে। ইত্যাদি।
ব্যায়াম ছাড়া পেটের মেদ কমানোর উপায়ঃ
ছেলেদের চিকন হওয়ার উপায় অনেকগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। কিন্তু এখন ব্যায়াম ছাড়া পেটের মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন-
- সকালে কমপক্ষে এক গ্লাস গরম লেবুর শরবত খেতে হবে। এই লেবুর শরবত গরম পানির মধ্যে টিপে দিয়ে হালকা লবণ দিয়ে খেতে হবে।
- আমরা বাঙালি ভাত খেতে ভালবাসি। কিন্তু আমরা যদি আমাদের মেয়ের কমাতে সাদা ভাত বর্জন করে আমাদেরকে লাল ভাত খেতে হবে।
- যেসব খাবার চিনিযুক্ত সেগুলো খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে কারণ চিনি খাওয়ার পরে শরীরের বৃদ্ধি হয়ে থাকে।
- আমাদের উচিত আমাদের মেদ কমানোর জন্য প্রতিদিন ৩ কোয়া করে রসুন খাওয়া। কারণ রসুন আমাদের শরীরের চর্বি কমিয়ে থাকে।
- লাল মাংস খাওয়ার থেকে দূরে থাকতে হবে কারণ মাংস খাওয়ার ফলে শরীরের সৃষ্টি হয়।
- আমাদের মধ্যে এমন অনেক অনেক রয়েছে যারা দ্রুত গতিতে খাবার খেয়ে থাকে। তাই খাবার খাওয়ার সময় অবশ্যই দ্রুত গতিতে খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
- কোন বেলায় না খেয়ে থাকা যাবে না।
- সব সময় ছোট পেটে খাবার খেতে হবে কারণ বড় প্লেটে খাবার খাওয়ার মাধ্যমে বেশি খাবার খেতে হয়। কারণ প্লেট বড় হওয়ার কারণে খাবারের ছড়িয়ে যায় এবং তার পরিমাণ বোঝা যায় না।
- যদি কোন আত্মীয়ের বাসায় যান বা আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে থাকেন তখন খাবার খাওয়ার সময় কখনো সৌজন্যবোধ থেকে বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না।
- অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- রাতের ঘুম কে কখন পাল্টানো যাবে না। ঘুমের সময় ঘুমাতে হবে। ঘুমের সময় আগ পিছ করা যাবে না।
- তেল জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে কারণ তেল জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে মেদ বৃদ্ধি হতে থাকে।
- যদি আমরা বাহিরে কোন প্যাকেজজাত খাবার খেয়ে থাকি তাহলে অবশ্যই তা জাচাই করে নিতে হবে সেই খাবার ফ্যাট ফ্রি খাবার কিনা।
- পুষ্টিকর শাকসবজি ফলমূল খেতে হবে। এগুলো খাবার শরীরে মেদ কমাতে সাহায্য করে।
লেখকের শেষ কথাঃ
আমরা এতক্ষণ ছেলেদের জীবন হওয়ার উপায় এর পাশাপাশি অনেক কিছু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। শরীরের মেদ কমানো ভালো এবং সেই অনুযায়ী চেষ্টা করা যেতে পারে। কিন্তু চিকন হতে যেয়ে শরীরকে বেশি কষ্ট দেওয়া যাবে না। এর ফলে দেখা গেল ওজন কমাতে যেয়ে শরীরের ক্ষতি বেশি হয়ে গেছে।
পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েব সাইটে ভিজিট করে পাশে থাকবেন। যে কোন প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন আমাদের যোগাযোগ এর ঠিকানায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url