ডিহাইড্রেশন এর লক্ষন গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
আপনারা কি ডিহাইড্রেশনের লক্ষন গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। ডিহাইড্রেশন আমাদের শরীরকে খুব ক্লান্ত করে তোলে।
এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আপনি এর ব্যাপারে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
ভূমিকাঃ
ডিহাইড্রেশন এমন একটি রোগ যেটির মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে পানি এবং লবণ বেরিয়ে যায়। ডিহাইড্রেশনের মাধ্যমে মানুষের অনেক সমস্যা হয়ে থাকে। এই সময় মানুষ অনেক দুর্বল বোধ করে। কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারে না। ডিহাইড্রেশনের অনেক লক্ষণ রয়েছে যা আমাদের জানা উচিত।
ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ গুলো জানার পরে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব এবং ডিহাইড্রেশন এর মোকাবেলা করতে পারবো। ডিহাইড্রেশন গরম কালে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। গরমকালে প্রচন্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। আমাদেরকে সব সময় অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে নিজেদের শরীরকে বাঁচাতে হবে।
ডিহাইড্রেটেড কিঃ
ডি হাইড্রেটেড বলতে আমরা বুঝি আমাদের শরীরে যখন পারমিশূন্য তখন বাণী স্বল্পতা দেখা দেয় তখন সেটিকে ডিহাইড্রেশন বলা হয়। ডিহাইডরেটেড মূলত কম পানি খাওয়ার ফলে এবং অতিরিক্ত ঘামলে কিংবা ডায়রিয়া ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। ডিহাইড্রেশন এর লক্ষন গুলো সম্পর্কে আমাদের সবার জানা উচিত।
মানুষ যখন অতিরিক্ত ঘামে তখন ঘামের মাধ্যমে মানুষের শরীরে থাকা পানি এবং লবণ বেরিয়ে যায়। ডিহাইডেটেড হলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পরে। ডিহাইড্রেশন এর লক্ষণ অনেক রয়েছে যা আমরা নিচে বিস্তারিত দেখবো।
ডিহাইড্রেশন এর লক্ষনঃ
ডিহাড্রেশন এর লক্ষন অনেক রয়েছে তা হলো-
- যখন একটি মানুষের প্রচন্ড পরিমাণে পানির পিপাসা লাগে তখন সেটি ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ হয়ে থাকে।
- ডিহাইড্রেশন হলে মুখমণ্ডল শুকিয়ে যায়। মুখ শুকিয়ে যায় এই সময়।
- এই সময় খুব মাথা যন্ত্রণা শুরু করে। মাথা যন্ত্রনায় মানুষ অসস্তি বোধ করা শুরু করে।
- মানুষের মেজাজ খুব খারাপ থাকে। এই সময় মানুষ এর ব্যবহার এ পরিবর্তন আসে যা অন্যরা পছন্দ করে না।
- চোখের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়। মানুষ এই সময় চোখ দিয়ে দেখতে অসুবিধায় পরে।
- শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অর্থাৎ পেশিতে টান ধরে।
- এ সময় মানুষের চামড়া প্রচণ্ড শক্ত হয়ে যায়।
- এ সময় প্রচন্ড মিষ্টি খেতে মন চায়।
- জিম করার সময় অল্পতেই শরীর দুর্বল হয়ে যায়।
- ডিহাইড্রেশন হলে এই সময় মানুষের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়ে থাকে।
- ডিহাইড্রেশন হলে অনেক সময় মানুষ মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যায়।
- ডিহাইড্রেশন হলে মানুষের শরীরের সুগারের মাত্রা কমতে থাকে।
- ডিহাইড্রেশনের সময় খুব কম প্রসাব হয় এবং প্রসবের রং পরিবর্তন হতে থাকে।
- এই সময় অনেক অলসতা এবং ক্লান্তি ভাব চলে আসে।
ডিহাইড্রেশনের চিকিৎসাঃ
আমরা এতক্ষন জানলাম ডিহাইড্রেশন এর লক্ষন গুলো। এবার আমরা জানবো ডিহাইড্রেশনের চিকিৎসা সম্পর্কে। ডিহাইড্রেশনের চিকিৎসা বলতে এই সময় মানুষকে বেশি করে স্যালাইন পানি খেতে হবে। যত বেশি সম্ভব ঘন ঘন পানি খেতে হবে। কারণ যখন মানুষের ডিহাইড্রেশন হয়ে থাকে তখন মানুষের শরীরে থাকা পানি এবং লবণ বেরিয়ে থাকে।
এর ফলে মানুষ পানি শূন্যতায় ভোগে যা মানুষকে অসুস্থ করে তোলে। এই সময় মানুষদেরকে সবসময় পোস্টিকর খাবার খেতে হবে। যদি বেশি সমস্যা হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধঃ
- ডিহাইড্রেশন মানুষের জন্য খুবই ক্ষতিকর একটি রোগ। এটি হলে মানুষ প্রচুর পরিমাণে অসুস্থ হয়ে পরে। অনেক সময় যেখানে সেখানে মানুষ অজ্ঞানপর্যন্ত হয়ে যায়। ডিহাইড্রেশন এর লক্ষন গুলো চোখে পরলে আমাদেরকে ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি উপায় গুলো মেনে চলতে হবে।
- ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে সব সময় কাছে পানির বোতল রাখতে হবে। আমরা যদি বাইরে বের হই তাহলে অবশ্যই পানির বোতল নিয়ে বের হতে হবে। আমরা যখন অতিরিক্ত ঘামি তখন আমাদের ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায় এর ফলে ডিহাইড্রেশন হয়ে থাকে। এটি থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে বেশি বেশি করে পানি খেতে হবে।
- যখন অতিরিক্ত তাপমাত্রা থাকবে তখন যে কোন শারীরিক পরিশ্রম করা কমিয়ে দেওয়াই ভালো। কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে মানুষ অতিরিক্ত ঘামবে এবং তার ফলে মানুষের শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যাবে। যেটি মূলত ডিহাইড্রেশনের কারন।
- প্রতিটি তো গরম থাকলে আমাদেরকে অবশ্যই নরম কাপড়চোপড় কিংবা ঢিলেঢালা কাপড়চোপড় পড়তে হবে। ধীরে ধলা কাপড়চোপড় পরলে বাতাস শরীরে লাগবে।
- যদি কোন এলাকায় অতিরিক্ত গরম থাকে তাহলে যথাসম্ভব সে এলাকা ত্যাগ করতে হবে। গরমের সময় মানুষ বেশি ডিহাইডেটেড হয়ে থাকে।
- অতিরিক্ত গরমের সময় বেশি বেশি করে মৌসুমী ফল খেতে হবে। মৌসুমী ফল খেলে মানুষ ডিভাইডেড থেকে বাঁচতে পারে।
- গরমের সময় ঘন ঘন স্যালাইন খেতে হবে। স্যালাইন খাওয়ার ফলে স্যালাইন এ থাকা পুষ্টি মানুষদেরকে ডিহাইডেটেড থেকে বাচাতে পারে।
ডিহাইড্রেশন কত প্রকারঃ
ডিয়ারড্রেশন মূলত তিন প্রকার। যথা-
- হাইপোটোনিক (শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি হয়),
- হাইপারটনিক (শরীরে জলের ঘাটতি হয়)
- আইসোটনিক (শরীরে জল ও ইলেকট্রোলাইট)
ডিহাইড্রেশন হলে কি খেতে হবেঃ
ডিহাইড্রেশন মূলত পানি শূন্যতা কারণেই হয়ে থাকে। ডিহাইড্রেশন এর লক্ষন গুলো জানা থাকলে আমরা সহজে এই রোগ চিহ্নিত করতে পারবো। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে যেসব খাবার খেতে হবে তা নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো-
- ডি হাইড্রেশন হলে প্রথমত শসা খাওয়া যেতে পারে কারণ শশায় রয়েছে প্রায় ৯৫ শতাংশ পানি। শসা খেলে শরীরের পানি শূন্যতা দূর হবে। তাছাড়াও শ্মশায় থাকা ভিটামিন, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
- আবার ডিহাইড্রেশন হলে স্ট্রবেরি খাওয়া যেতে পারে। কারণ স্ট্রবেরিতে প্রায় ৯১ শতাংশ পানি রয়েছে যা শরীরের পানি শূন্যতার অভাব পূরণ করে থাকবে। স্ট্রবেরির উপকারিতা অনেক। এটির মাধ্যমে শরীরের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন ক্যান্সার এর রোগ থেকে আমাদের কে বাঁচাতে পারে।
- ডিহাইড্রেশন হলে লেতুসপাতা খেলে খুবই উপকারী পাওয়া যায় কারণ লেডিস পাতায় রয়েছে প্রায় ৯৬ শতাংশ পানি। এটি খাওয়ার মাধ্যমে যেমন মানুষের শরীরে পানির অভাব দূর হয় তেমন আবার এটি খাওয়ার মাধ্যমে মানুষের ইমিউন সিস্টেম ভালো থাকে।
- আবার কমলা ডিহাইড্রেশনের সময় খুবই উপকারিতা করে। কারণ কমলায় রয়েছে প্রায় ৮৮ শতাংশ পানি। এটি ডিহাইড্রেশন থেকে মানুষকে রক্ষা করার পাশাপাশি মানুষের কিডনির পাথর হওয়া রোধ করে।
- ডিহাইড্রেশনের সময় টমেটো খুবই উপকারী হয়ে থাকে। টমেটো এমন একটি সবজি যেখানে প্রায় ৯৪ শতাংশই পানি। টমেটো বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। টমেটোকে মানুষ সাধারণত সালাদ বানিয়ে কিংবা টমেটোর সস হিসেবে বেশি খেয়ে থাকে।
- ডিহাইড্রেশনের সময় তরমুজ এমন একটি ফল যার মধ্যে রয়েছে ৯২ শতাংশ পানি এটি মানুষদেরকে ডিহাইড্রেশনের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। ইত্যাদি।
লেখকের শেষ কথাঃ
আমরা এতক্ষণ ডিহাইড্রেশন এর লক্ষন গুলো ছাড়াও ডিহাইড্রেশন বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। ডিহাইড্রেশন আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি করে। ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচার যেগুলো নিয়ম কানুন রয়েছে তা আমাদেরকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করে পাশে থাকবেন। আপনাদের সাপোর্ট আমাদেরকে অনুপ্রেরিত করবে সঠিক তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরার।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url