বমি বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আপনি কি বমি বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই পোস্টটি মাধ্যমে আপনি বমি বন্ধ করার উপায় ছাড়াও বমি রিলেটেড আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন।
বমি সচরাচর সকল বয়সের মানুষেরই হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে মানুষের বমি ভাব হয়ে থাকে। নিচে বিস্তারিত জেনে নেন।
ভূমিকাঃ
যখন মানুষ অনেক অসুস্থ বোধ করে তখন বমি হয় তবে বমি হওয়ার পিছনে অনেক কারণও থাকতে পারে। বিশেষ করে যাত্রাপথে মানুষ বেশি বমি করে থাকে কারণ অনেক মানুষ রয়েছে যারা বাসে কিংবা মাইক্রো গাড়িতে উঠতে পারে না। এই সময় তাদের অনেক অস্বস্তি বোধ হয়। তাছাড়াও গাড়িতে থাকা গন্ধ অনেকেই সহ্য করতে পারে না।
এই কারণে মূলত মানুষ বেশি যাত্রা পথে বমি করে থাকে। এছাড়াও বমি হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে যা আপনারা নিচে বিস্তারিত জানতে পারবেন। বমির মাধ্যমে মানুষের পেটে থাকা সমস্ত খাবার বাইরে বের হয়ে আসে এই কারণে মানুষ আরো অসুস্থ বোধ করে। বমি হওয়ার পর অসুস্থ শরীরকে সুস্থ করতে অনেক ধরনের খাবার খেতে হয়। যেমন- আপেল,কলা,দুধ এবং বিভিন্ন ফলের রস ইত্যাদি।
বমি বন্ধ করার দোয়াঃ
বমি বন্ধ করার জন্য ইসলাম এ দোয়া রয়েছে সেটি হলো-ওয়াল্লা জিনা আমানূ ওয়া আমিলুছ সলিহাতি ওয়া আমানূ বিমা নুঝঝিলা আলা মুহাম্মাদীও ওয়াহুয়াল হাক্কু মির রব্বিহিম। কাফফারা আনহুম সাইয়িআতিহিম ওয়া আসলাহা বালাহুম। আমরা অনেক সময় বমির সমস্যায় পরি। কখনো ভ্রমণ এর সময় কখনো বা বাসা বাড়িতে। যখন বমির সমস্যা বেড়ে যাবে বা বমি হবার ভাব হবে তখন উপরের দোয়া টি পড়া উচিত। বমি বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত নিচে জানতে পারবেন।
বমি বন্ধ করার উপায়ঃ
- বমি যখন হবে তখন কখনো বমি আটকে রাখা উচিত না। বমি হওয়া শুরু হলে সাথে সাথে বমি করে ফেলা উচিত কারন বমির মাধ্যমে পেটে থাকা বিষক্রিয়া বের হয়ে যায়। এতে পেটের অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- যদি কখন বমি বমি ভাব হয় তাহলে সেই সময় হাঁটাহাঁটি করা উচিত। হাঁটাহাঁটি করার ফলে বমি হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- বমি ভাব শুরু হলে জরে জরে নিশ্বাস নিতে হবে এর ফলে বমি ভাব কমে যায়।
- অনেক সময় বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমাদের কে বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকা উচিত না। অন্তত কিছু হলেও খেয়ে নিতে হবে।
- বমি বন্ধ করার উপায় হলো আদা চা। আদা চা বমি বন্ধ করার জন্য একটি ভালো উপায়।
- তাছাড়াও বমি বমি ভাব শুরু হলে বমি না হওয়ার মেডিসিন খাওয়া উচিত। এর ফলে বমি হয় না।
- বমি ভাব শুরু হলে ওর স্যালাইন খাওয়া উচিত এর ফলে শরীর সুস্থ হবে এবং বমি ভাব কমে যাবে।
- আবার বমি ভাব লাগলে এলাচ এবং মধু একসাথে খেলে বমি ভাব দূর হয়ে থাকে।
- মৌরি বীজ নামক একটি বীজ রয়েছে যেটি চিবিয়ে কিংবা চা বানিয়ে খেলে বমি দূর হয়ে যায়।
- বমি বন্ধ করার আর একটি উত্তম মাধ্যম হতে পারে লেবু দিয়ে শরবত বানিয়ে তা পান করা।
- আবার লবঙ্গ খাওয়ার মাদ্ধমেও বমির ভাব দূর হয়ে থাকে। যখন বমি ভাব শুরু হবে তখন অন্তত একটি লবঙ্গ মুখে নিয়ে রাখলে বমি ভাব দ্রুত দূর হয়ে থাকবে।
- অতিরিক্ত বমি ভাব লাগলে শুধু পানির সাথে চিনি মিশিয়ে পান করলে বমি ভাব দ্রুত দূর হয়ে থাকে।
বমি হলে কি খাবার খাওয়া উচিতঃ
- বমি হওয়ার পর সাধারণত আমরা বেশি পানি খেয়ে থাকি তবে গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত পানি খেলে সমস্যা হতে পারে। তাই বমি হওয়া পর বরফ এর তুক্রা খাওয়া যেতে পারে।
- যাদের ক্রিম ক্র্যাকারস সমস্যা রয়েছে তাদের কে ননটা জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। যেমন ননটা বিস্কুট কিংবা চকলেট। যেসব মেয়ে গর্ভবতী তাদের বমি ভাব বেশি হয় তাই গর্ভবতী সময় ননটা খাবার খেতে হবে। এর ফলে বমি ভাব দূর হয়ে যাবে।
- বমি হওয়ার পর কমলার জুস খুব ভালো উপকার করে তাই বমি হবার পর এক গ্লাস করে কমলার জুস খেতে হবে। এটি শরীর এর জন্য উপকার অনেক। তাছাড়াও বমি ভাব হলে বমি বন্ধ করার উপায় এর মদ্ধেও পরে।
- বমি হবার পর ভাত,কলা,আপেল খাওয়া যেতে পারে এটি শরীর এর জন্য ভালো হবে।
- দই খেলে পাকস্থলি ঠাণ্ডা থাকে তাই বমি হবার পর দই খাওয়া উচিত এর ফলে পেট ঠাণ্ডা অনুভব হবে।
- বমি হবার পর এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধও অনেক উপকারে আসতে পারে এটি খেলেও পেট ঠাণ্ডা থাকে।
- গ্যাস হয় এমন খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে অর্থাৎ মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। মশলা যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে বমি ভাব বেশি দেখা দিতে পারে।
বমি ভাব হওয়ার কারণঃ
বমি ভাব হওয়ার অনেক কারণ হতে পারে। বমি বন্ধ করার উপায় সমূহ জানতে হলে কি কারণে বমি হয় সেটিও জানতে হবে। বমি ভাব হওয়ার কারণগুলো নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো-
- গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস এবং অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ব্যাধির সমস্যা হলে বমি বমি ভাব হয়।
- আমরা প্রতিনিয়ত অনেক খাবার খাই এসব খাবার বিষক্রিয়া হয়ে গেলে বমি বমি ভাব হয়।
- অতিরিক্ত মাথা ঘোরা শুরু হলে বমি বমি ভাব শুরু হয়।
- যাদের মাইগ্রেন এর সমস্যা থাকে তাদের বমি বমি ভাব শুরু হয়।
- আমারা অনেক সময় রক্তে শর্করার অভাব অর্থাৎ রক্তে শর্করার পরিমান কমে যাওয়ার সমস্যায় পরি। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে বমি বমি ভাব হয়।
- আবার ঘুমের সমস্যা থাকার কারনেও বমি বমি ভাব হয়।
- আবার যাদের ডিহাইড্রেশন এর সমস্যায় পরে তাদের বমি বমি ভাব হয়।
- এছাড়াও হাইপারথার্মিয়ার কারনেও বমি বমি ভাব হয়ে থাকে।
- অতিরিক্ত মদ পান করার কারনেও বমি হয়ে থাকে।
- আবার অতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারনেও বমি ভাব হয়ে থাকে।
বমি বমি ভাব হলে কি ওষুধ খেতে হবে?
বমি বন্ধ করার উপায় গুলোর মধ্যে ওষুধ সেবনও একটি উপায়। বমি ভাব হলে যেসব ওষুধ খাওয়া উচিত তা হলো-
- অন্ডেম ৪ এম জি ট্যাবলেট এম ডি
- পেরিসেট ৪ এম জি ট্যাবলেট এম ডি
- ওন্ডানবিক ৪ এম জি ট্যাবলেট এম ডি
- জোফার ৪ এম জি ট্যাবলেট এম ডি
উপরে উল্লেখিত ওষুধ গুলো বমি ভাব দূর করতে ভুমিকা রাখে। এসব ওষুধ বমি ভাব দূর করতে ভালো ভুমিকা রাখে।
লেখকের শেষ কথাঃ
আমরা এতক্ষণ বমি বন্ধ করার উপায় জানার পাশাপাশি বমি বিষয় অনেক কিছু জানতে পারলাম। বমি হতে থাকলে যে এটি বন্ধ করার কোন সমাধান নেই তা না। আমরা যদি বমি বন্ধ করার উপায় গুলো সঠিকভাবে পালন করে থাকি তাহলে আমাদের বমি ভাব খুবই কম হবে। আমাদেরকে সদা চেষ্টা করতে হবে যেসব খাবার খেলে আমাদের পেটে সমস্যা হবে কিংবা আমরা গ্যাস্টিকের সমস্যায় পরবো এমন ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা। কারণ মূলত খাবারের ভেজাল থাকার মাধ্যমে বেশি বমি ভাবের কারণ হয়ে থাকে।
পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করে পাশে থাকবেন। আপনাদের ভালোবাসা আমাদেরকে অনুপ্রেরিত করবে আপনাদের সামনে সঠিক তথ্য তুলে ধরার।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url