কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হলে কি করা উচিত?
আপনি কি কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হলে কি করা উচিত এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গা নির্বাচন করেছেন। এখানে আপনি কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে এটু-জেট জানতে পারবেন।
আপনি কি কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হলে কি করা উচিত এই বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।
আপনি এখানে কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণ,দশটি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম,কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায়,কম্পিউটার ভাইরাস কি কি ক্ষতি করে,এসব সম্পূর্ণ তথ্য বিস্তারিত জানতে হবে।
ভূমিকা:
কম্পিউটার হলে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র। কম্পিউটার এর মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো কাজ খুবই দ্রুত গতিতে সহজে করা সম্ভব। বর্তমানে কম্পিউটার ব্যবহারকারী সংখ্যা অনেক বেশি এবং দিনে দিনে আরো বেড়ে চলেছে। কিন্তু কম্পিউটারে একটি ক্ষতিকর প্রোগ্রাম বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই ক্ষতিকর প্রোগ্রামকে আমরা ভাইরাস নামে চিনি। কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় কিন্তু রয়েছে যা আমরা নিচে জানতে পারবো।
ভাইরাসের কারণে কম্পিউটারের প্রতি অনেক অনেক কমে যায়। এর ফলে কম্পিউটারে দ্রুত গতিতে কাজ সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। ফলে মানুষ পিছিয়ে পড়তে থাকে। অফিস আদালত স্কুল ইত্যাদি জায়গার কাজ বন্ধ হয়ে থাকে। কম্পিউটারের রূপ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে যা সহজে ধরা যায় না। একমাত্র কম্পিউটার ভাইয়েরা সমাপ্ত করতে পারে এন্টিভাইরাস।
কম্পিউটার ভাইরাস কি?
ভাইরাস খুব ক্ষতিকারক একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম। কম্পিউটার ভাইরাস বিভিন্ন ভাবে কম্পিউটার এ প্রবেশ করে। কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটার এ প্রবেশ করার পর 'মেমরিতে' তারা তাদের নিজস্ব সংখ্যা বৃদ্ধি করে। কম্পিউটার ভাইরাস এক ডিভাইস হতে ওপর একটি ডিভাইস এ খুব সহজে প্রবেশ করতে পারে। কম্পিউটার ভাইরাস পেইন-ড্রাইভ,সিডি, ইন্টারনেট ইত্যাদি মাধ্যমে কম্পিউটার এ প্রবেশ করে এবং এক কম্পিউটার হতে ওপর একটি কম্পিউটার এ যেতে পারে।
কম্পিউটার কে কবে আবিষ্কার করেন? কম্পিউটারের কাজ কি? কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটার এ প্রবেশ করলে এটি বিভিন্ন প্রোগ্রাম,ডাটা নষ্ট করে ফেলে।এর কারনে ব্যবহারকারীরা তাদের দরকারি তথ্য হারিয়ে ফেলে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যায় পরে। কম্পিউটার ভাইরাস কোন কম্পিউটার ছাড়া নিজেদের কে সামনে আনতে পারে না। এসব কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় আছে যা আমাদের কে অনেক সাবধানতায় ব্যবহার করতে হবে।
১০ টি কম্পিউটার ভাইরাসের নামঃ
মানুষ এর শরীরের রোগ বালাই দিন এর পর দিন যেমন বৃদ্ধি পায় তেমন কম্পিউটার ভাইরাস এর পরিমাণও দিন এর পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার অনেক কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় রয়েছে। বর্তমানে অসংখ্য কম্পিউটার ভাইরাস রয়েছে। যেমন-
- স্টিলথ ভাইরাস;
- ম্যাক্রো ভাইরাস;
- পার্টিশন সেক্টর ভাইরাস;
- মিউটেটিং ভাইরাস;
- বুট সেক্টর ভাইরাস;
- ফাইল ভাইরাস;
- মেমোরি রেসিডেন্ট ভাইরাস;
- পলিমরফিক ভাইরাস
- কমপেনিয়ন ভাইরাস;
- জেনারেল পারপাস ভাইরাস।
কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণঃ
কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হলে যা করা উচিত তা জানতে হলে আগে কম্পিউটার ভাইরাস এর লক্ষন সম্পর্কে জানতে হবে ।
- যদি কোন কম্পিউটার ব্যবহারকারী কম্পিউটার চালানোর সময় তার কম্পিউটার এ নিচে উল্লেখিত ভাইরাস আক্রান্ত লক্ষনগুলি দেখতে পায় তাহলে তাকে বুঝে নিতে হবে তার কম্পিউটার কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।
- যদি কম্পিউটার চালানোর সময় কম্পিউটার চালু হতে দীর্ঘটাইম নেয় অর্থাৎ সাধারন সময় হতে বেশি সময় লাগায় তাহলে সেটি কম্পিউটার ভাইরাস এর একটি লক্ষন।
- আমাদের কম্পিউটার এ অসংখ্য ফাইল থাকে।আর এই অসংখ্য ফাইল এর মধ্যে যদি 'এক্স'(EXE) এবং 'কম'(COM) ফাইল এর আকার সাধারন এর চেয়ে পরিবর্তন হয় তাহলে এটি একটি কম্পিউটার ভাইরাস লক্ষন হবে।
- কম্পিউটার চালাতে যেয়ে যদি প্রত্যাশিতর বাহিরে 'ইরোর ম্যাসেজ'(EROR MESSAG)বার বার দেখা দেয় তাহলে এতিও একটি কম্পিউটার ভাইরাস এর লক্ষন।
- কম্পিউটার চালাতে যেয়ে যদি কম্পিইউটার 'লক'(LOACK) হয়ে যায় তাহলে কম্পিউটারটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত থাকবে।
- কম্পিউটার খুব দ্রুত গতিতে তার কাজ করে থাকে। যদি কম্পিউটার এর কজ করার ক্ষমতা অপ্রত্যাশিত ভাবে কমে যায় তাহলে সেটি ভাইরাস এর একটি লক্ষন হতে পারে।
- কম্পিউটার এর হার্ডডিস্ক এ অসংখ্য ফাইল রাখা হয়।এখন যদি কোন ফাইল কিংবা তথ্য কম্পিউটার এ খুজে না পাওয়া যায় তাহলে বুঝে নিতে কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।
- কম্পিউটার এ কোন ফাইল সেভ কিংবা প্রিন্ট করতে যদি অপ্রত্যাশিত অধিক সময় নেয় তাহলে বুঝে নিতে হবে কম্পিউটারটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।
- কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটার এর বায়োস মুছে ফেলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে যার ফলে কম্পিউটার চালু হতে চায় না।এমন কোন সমস্যা যদি পরে তাহলে ভেবে নিতে হবে কম্পিউটারটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত।
- কম্পিউটার এ তথ্য রাখার জন্য ফাইল বানিয়ে তার ভেতরে তথ্য রাখা হয়। এখন সেই ফাইল এর ভেতরে যদি অপ্রত্যাশিত ফাইল একা একা তৈরি হতে থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে কম্পিউটারটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত।
- যদি কম্পিউটার একা একা কোন সফটওয়্যার ইন্সটল করতে থাকে বা একা একাই বিভিন্ন ওয়েবসাইট এ চলে যায় তাহলে কম্পিউটারটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকবে।
- কম্পিউটার মেমোরির ফাকা যায়গা যদি কিছু না রাখতেই একা একা পুরন হয়ে যায় তাহলে সেটি কোন না কোন ভাইরাস দ্বারাই করা সম্ভব হবে।
কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায়ঃ
উপরে এতক্ষন আমরা কম্পিউটার ভাইরাস কি?১০টি কম্পিউটার ভাইরাস এর নাম এবং কম্পিউটার ভাইরাস এর লক্ষন সম্পর্কে জানতে পারলাম। এবার আমরা জানবো কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় সমূহ-
- কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের প্রধান হাতিয়ার হলো শক্তিশালী এন্টিভাইরাস। এন্টিভাইরাস কম্পিউটার ভাইরাস এর প্রতিশেধক। কম্পিউটার ভাইরাস এ আক্রান্ত হতে রক্ষা পেতে আমাদের কে আগে ভাইরাস আটকানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কয়েকটি এন্টিভাইরাস এর নাম হলো-AVAST,AVG, NORTON ANTI-VIRUS ইত্যাদি। প্রত্যেকটি এন্টিভাইরাস এর আলাদা আলাদা কাজ রয়েছে তারা একেকজন একেক রকম কাজে পারদর্শী।
- কম্পিউটার এর সকল ফোল্ডার,ফাইল,সফটওয়্যার প্রতিদিন একবার হলেও ভাইরাস স্কেন এর মাধ্যমে স্ক্যান করে নেওয়া উচিৎ। এর ফলে ভাইরাস দ্বারা কম্পিউটার আক্রান্ত থাকলে খুব সহজে তা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে এবং তা প্রতিকার করা যাবে।
- কম্পিউটার এ কাজ করতে হলে প্রায় সময় আমাদের কে বাহিরের ডিস্ক কিংবা পেইনড্রাইভ কম্পিউটার এ দিতে হয়। এই ক্ষেত্রে আমাদের কে আগে সেইসব ডিস্ক কিংবা পেইনড্রাইভ এ ভাইরাস আছে কি না তা ভাইরাস স্ক্যান দ্বারা স্ক্যান করে তারপর কম্পিউটার এ প্রবেশ করাতে হবে।
- কম্পিউটার এর ফাইল কিংবা তথ্য নিয়মিত ব্যাকআপ নিয়ে রাখতে হবে।কারন ব্যাকআপ এর ফলে ফাইল গুলো সেভ থাকবে যার ফলে কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলেও ফাইল হারানোর ভয় থাকবে না।
- ইন্টারনেট থেকে কোন ফাইল কিংবা ই-মেইল গ্রহন করার প্রয়োজন হলে সেই সময় অনেক সতর্কতা রাখতে হবে।
- কম্পিউটার এ অসংখ্য ফাইল প্রোগ্রাম থাকে।এখানে সকল ফাইল exe এবং প্রোগ্রাম com কে Read Only করে রাখতে হবে।
- কম্পিউটার এ অনেক সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়।আমাদের কে কখন কপি সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিৎ না। কপি সফটওয়্যার গুলোতে অনেক ভাইরাস থাকে। কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করার আগে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।
- কম্পিউটার এ অনেক সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়।আমাদের উচিৎ সবসময় অরজিনাল সফটওয়্যার ব্যবহার করার।অরজিনাল সফটওয়্যার ব্যবহার এর ফলে সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ভাইরাস কম্পিউটার এ প্রবেশ করতে পারে না।
- কম্পিউটার এর ভাইরাস যদি কোন ভাবে ছড়ানো না যায় তাহলে উইন্ডোজ ফেলায় দিয়ে পুনরায় উইন্ডোজ কম্পিউতার এ সেত-আপ করতে হবে।
কম্পিউটার ভাইরাস কি কি ক্ষতি করে?
ভাইরাস এর ইংরেজি শব্দ হলো-VIRUS। VIRUS এর পূর্ণ রূপ হলো-VITAL INFORMATION RESOURCES UNDER SIEGE।কম্পিউটার ভাইরাস অতি ক্ষতিকর একটি প্রোগ্রাম যা কম্পিউটার এর ব্যপক ক্ষতি করে থাকে। কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় গুলো মেনে চললে এসব ভাইরাস এর মোকাবেলা সম্ভব। কম্পিউটার ভাইরাস কি কি ক্ষতি করে তা হলো-
- কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটার এর গতি কমায় ফেলে।
- কম্পিউটার এর ফোল্ডার,ফাইল মুছে ফেলে দেয়।
- অনেক সময় কম্পিউটার এ রাখা তথ্য চুরি করে।
- কোন কমান্ড ছাড়া একা একা কাজ করে ।
- বায়োস মুছে ফেলে দেয় ফলে কম্পিউটার চালু হয় না। ইত্যাদি।
শেষ কথাঃ
কম্পিউটার বর্তমান পৃথিবীর একটি জনপ্রিয় যন্ত্র। বর্তমানে সকলেই এখন কম্পিউটারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কম্পিউটারের মাধ্যমে যে কোন কাজ অতি দ্রুত ও সহজে করা সম্ভব হয়ে থাকে। কম্পিউটারের মাধ্যমে কাজ করার ফলে মানুষ এখন অধিক লাভবান হতে পারে। বর্তমান কম্পিউটারের তুলনা কম্পিউটার নিজেই। কম্পিউটার অতি দ্রুত গতিতে তার কাজ সম্পাদন করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে কম্পিউটার ভাইরাসের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সাথে সাথে কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কম্পিউটার ভাইরাসের কারণে কম্পিউটার তার কাজ ঠিক মতন করতে পারে না। কম্পিউটার ভাইরাসের কারণে কম্পিউটারের প্রচুর ক্ষতি হয়ে থাকে। এই পোস্টে আমরা কম্পিউটার ভাইরাস কি? কম্পিউটার ভাইরাসের নাম,কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণ,প্রতিকার, কি কি ক্ষতি করে এসব সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আমাদের উচিত কম্পিউটার ব্যবহারের সময় প্রত্যেকটি জিনিস লক্ষ্য রাখা,যাতে কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটার এ হতে না পারে এবং আমরা ভাইরাসের প্রতিকার করতে পারি।
পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে ভুলবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url